মোঃ শামসুজ্জামান রিয়াদ উপজেলা প্রতিনিধি বদরগঞ্জ,রংপুর
রংপুরের,বদরগঞ্জ উপজেলার লালদিঘী সহ বিভিন্ন ইউনিয়নে বৃদ্ধি পেয়েছে বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সেবন ও বিক্রির প্রবণতা। এমন অভিযোগ জনপ্রতিনিধিসহ একাধিক স্থানীয় বাসিন্দাদের,
উপজেলার প্রতিটি এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ার কারণে দ্রুতই মাদক কারবারিরা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে মাদকদ্রব্য সরবরাহ করছেন। আর মাদক সহজে পাওয়া যায় অনেকে কৌতূহলবশত না বুঝে মরণফাঁদ নামক মাদকের নীল ছোবলে যুক্ত হচ্ছে। ফলে যুব সমাজ নিয়ে চরম উদ্বিগ্নের মধ্যে রয়েছে অভিভাবকরা।
পুলিশ প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে ছত্রছায়ায় এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি পুরো উপজেলাকে ঠেলে দিচ্ছে মাদকের অন্ধকার জগতে। বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ইয়াবা,গাঁজা, হিরোইন দেশি মদ,পাওয়া যাচ্ছে।নেশা সেবন বিস্তার আশঙ্কাজনকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
মাঝে মধ্যে পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন চিহ্নিত কিছু মাদক কারবারিদের আটক করে জেলে দিলেও আইনের ফাঁক দিয়ে স্বল্প সময়ের মধ্যে বেরিয়ে এসে আবার দেদারসে শুরু করে মাদকের কারবার। চিহ্নিত মাদক কারবারিদের ও মাদকের সম্রাটদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।
আবার মাদকের সঙ্গে একাধিক রকমের জুয়াসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডও বেড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ। এলাকার স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ যুবসমাজ মাদকে আসক্ত হয়ে এবং জুয়ায় টাকা হেরে দিনে দুপুরে এলাকায় বাড়িঘর চুরি, ছিনতাই সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। অনেকেই মাদকের কারবার করে হঠাৎ করেই আঙুল ফুলে কলাগাছে পরিণত হয়েছে মাদক কারবারিদের টাকা জোরের কারণে স্থানীয়রা তাদের ভয়ে কোনো প্রতিবাদও করতে পারে না। বদরগঞ্জ উপজেলার রাধানগরের কয়েকজন বয়স্ক ও যুবক জানিয়েছেন, হঠাৎ করে মাদকের বিক্রি ও সেবন বৃদ্ধি পেয়েছে। কেউ কেউ কৌশল পাল্টে স্থান পরিবর্তন করে অনায়াসে মাদক বিক্রি করছে। আর এ কারণে বৃদ্ধি পেয়েছে মাদকসেবীর সংখ্যা।
তবে জুয়াও বিভিন্ন স্থানে চলে জানিয়েছে তারা জানান, গোপন জায়গায় রাতে জুয়া খেলে লোক পাহারাদার রেখে। আর লুডুর জুয়া তো এখন ওপেন সিক্রেট। এলাকায় পুলিশ পৌঁছলে তারা একে অপরের মাধ্যমে খবর দিয়ে দেয়
এমন অভিযোগ এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তির। অভিযোগ করে বলেন, বেশ কিছুদিন যাবৎ লালদীঘি এলাকাটি অনেকটাই মাদকমুক্ত ছিল। কিন্তু সম্প্রতি চিহ্নিত মাদক কারবারি পুনরায় মাদকের রমরমা ব্যবসা শুরু করেছে। কোনো কিছু বলতে গেলেই লাঞ্ছিত হয়রানিমূলক ভয় দেখায়। হাতের কাছে পাওয়ায় মাদকের নীল নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে তরুণ ও যুব সমাজ। সন্তানরা বড় হয়ে গেলে আর চোখে চোখে রাখা অসম্ভব হয়ে ওঠে। এলাকার এক মাদককারবারি পরিচয় গোপন রেখে গণমাধ্যমকর্মীকে বলেন, মাদকদ্রব্যের চলাচলের পথ রোধ না করা পর্যন্ত মাদকের বিস্তার প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়
মাদকের রমরমা ব্যবসা পুলিশ বাহিনী ইচ্ছে করলেই নিমিষের মধ্যে এলাকা থেকে মাদকের দৌরাত্ম্য কমাতে পারে। মাদকমুক্ত করতে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারে। রাধানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক মোবাইল ফোনে দৈনিক জাগ্রত সংবাদ কে বলেন, ইউনিয়ন অধিকাংশ স্থানই বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যে মাদকদ্রব্য বিক্রি হয়। বিশেষ করে গাঁজা বেশি বিক্রি হয়। তিনি একটু ক্ষোভ নিয়েই বলেন, ইউনিয়নের প্রতিটি আইনশৃঙ্খলা মিটিং-এ মাদক নিয়ে কথা বলেছি। কোনো লাভ হয় না। তাই মাদক নিয়ে আর কোনো কথা বলতে চাই না। কিন্তু যখন দেখি ইউনিয়নের তরুণ-যুবকরা চোখের সামনে মাদকের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে, তখন খুব কষ্ট হয়, খুব খারাপ লাগে। অনেকবার মাদকের বিস্তাররোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও তা বাস্তবায়ন করেও কোনো ফলাফল না পাওয়া যায়নি। বদরগঞ্জ থানার ইনচার্জ (ওসি) আতিকুর রহমান মোবাইল ফোনে, মাদকের বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বিষয়টি দেখতেছি। থানা পুলিশ সব সময় মাদকের বিরুদ্ধে। আমরা প্রতিনিয়তই মাদকের বিস্তার রোধে জড়িতদের আটক করছি এবং আইনগত ব্যবস্থাও গ্রহণ করছি। এই উপজেলায় মাদকের বিস্তারকে জিরো টলারেন্সে আনতে আমরা পুলিশ বদ্ধপরিকর। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে এবং চলবে।