আজগর সালেহী, ব্যুরো চিফ, চট্টগ্রাম
ফটিকছড়ি উপজেলার বিভিন্ন বিট এলাকায় অসাধু বন কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় সরকারি বাগানের মূল্যবান গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে এই চোরাই গাছ কাটা ও পাচার সিন্ডিকেট সক্রিয় থাকলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
জানা যায়, নারায়ণহাট রেঞ্জের দাঁতমারা, নারায়ণহাট, বালুখালি, ধুরুং বিট; হাসনাবাদ রেঞ্জের তারাখোঁ, হাসনাবাদ বিট; হাজারিখিল রেঞ্জের ফটিকছড়ি, হাজারিখিল বিট; করেরহাট রেঞ্জের আধাঁরমানিক, কয়লা, হেয়াকোঁ বিট; এবং হাটহাজারী রেঞ্জের শোভনছড়ি, শর্তা, মন্দাকিনি বিট থেকে নিয়মিত গাছ কাটা হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, কিছু অসাধু বন কর্মকর্তা এবং স্থানীয় প্রভাবশালীদের যোগসাজশে এই চোরাই গাছের কারবার চলছে। সরকারি সম্পদের অপচয়ের পাশাপাশি পরিবেশের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বন বিভাগের কিছু কর্মকর্তার সহযোগিতায় এই গাছ কাটা সহজ হয়ে উঠেছে। তথ্য ফাঁসের কারণে চোরাই কাঠ পাচার নির্বিঘ্নে চলছে, এবং কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না।
এলাকাবাসীরা জানান, গাড়ি প্রতি নির্দিষ্ট একটা অংক বিট কর্মকর্তাদের দিয়ে অথবা বাগানের এরিয়া অনুযায়ী একটা অংক দিয়ে তাদের সাথে চুক্তি করে এবং নামে বেনামে রাজনৈতিক প্রভাব কাটিয়ে দিব্বি চলছে গাছ কাটার হিড়িক।
ফেস্ট অফিসে ফোন দিলে তারা জেনেও না জানার ভান করে। পাবলিক নিজের খেয়ে কতক্ষণ অভিযোগ করবে?!
বাংলাদেশের বন আইন, ১৯২৭-এর ২৬ ধারা অনুযায়ী সংরক্ষিত বন থেকে গাছ কাটা দণ্ডনীয় অপরাধ। এ অপরাধ প্রমাণিত হলে ৬ মাস থেকে ৩ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা জরিমানা, কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে।
পরিবেশবিদরা সতর্ক করে বলছেন, লাগাতার গাছ কাটা বন্ধ না হলে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হবে, মাটিক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়বে এবং স্থানীয় কৃষি ও জীবনযাত্রার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
স্থানীয় জনগণ এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং অবৈধ গাছ কাটা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তারা চান, বন বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা নজরদারি বাড়িয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিক।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের করেরহাট ও নারায়ণহাট বিটের সহকারী বন সংরক্ষক মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, “আমার এলাকায় কোথাও বন অপরাধ সংঘটিত হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নির্দিষ্ট স্থানের তথ্য জানালে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
তবে করেরহাট রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহদি হাসান ও নারায়ণহাট রেঞ্জ কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ আবরারুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোনে পাওয়া যায়নি এবং হোয়াটসঅ্যাপেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।