1. dailyjagratasangbad@gmail.com : দৈনিক জাগ্রত সংবাদ : দৈনিক জাগ্রত সংবাদ
  2. info@www.dailyjagratasangbad.com : দৈনিক জাগ্রত সংবাদ :
বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ০৪:৫৫ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
গাজীপুরের শ্রীপুরে অগ্নিকাণ্ড সখিপুরে কাকড়াজান ইউনিয়নে উন্মুক্ত বাজেট ঘোষণা। চট্টগ্রামে বিতর্কের জেরে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী খু’ন, চার সহপাঠী গ্রেপ্তার সেনবাগে রাতের আধাঁরে মুখোশধারীদের তান্ডব,দোকান ঘর ভাংচুর করে অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি নির্বাচিত সরকার ছাড়া দেশের উন্নয়ন করা সম্ভব নয়-বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু ভূজপুরের মুফতি শাহেদ সুলতানী কাতার ধর্ম মন্ত্রণালয়ে ইসলামিক স্কলার নিযুক্ত ৩ তারিখের মহাসমাবেশ সফল করতে হাটহাজারীতে হেফাজত ইসলামের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত গণতান্ত্রিক প্রশাসনে ই-গভর্ন্যান্সের ভূমিকা ও সম্ভাবনা ঝিনাইদহ হাইওয়ে পুলিশের অভিযানে ১৬ পিস ফেনসিডিলসহ একজন আটক নিখোঁজের ১২ ঘণ্টা পর কলেজ ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার কালকিনিতে হাতকড়াসহ পালানো আসামি গ্রেফতার।

গণতান্ত্রিক প্রশাসনে ই-গভর্ন্যান্সের ভূমিকা ও সম্ভাবনা

  • প্রকাশিত: বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫
  • ২ বার পড়া হয়েছে

পাণ্ডুলিপি
আখতার হোসাইন খান

বিশ্বায়নের যুগে তথ্যপ্রযুক্তির অভাবনীয় অগ্রগতির ফলে রাষ্ট্রীয় প্রশাসন ও সেবাপ্রদানে এসেছে মৌলিক পরিবর্তন। গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি হলো স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ। এই প্রেক্ষাপটে ই-গভর্ন্যান্স বা ইলেকট্রনিক প্রশাসন একটি কার্যকর ও সমসাময়িক ধারণা, যা প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে প্রশাসনকে আরও গণমুখী, গতিশীল এবং কার্যকর করতে সাহায্য করে। বাংলাদেশসহ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে ই-গভর্ন্যান্স ধীরে ধীরে গুরুত্ব পাচ্ছে। এই প্রবন্ধে গণতান্ত্রিক প্রশাসনে ই-গভর্ন্যান্সের ভূমিকা, চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

ই-গভর্ন্যান্স বলতে বোঝায় সরকার ও জনগণের মধ্যে প্রযুক্তিনির্ভর যোগাযোগ ও সেবাপ্রদান ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে নাগরিকরা দ্রুত ও সহজে সরকারি তথ্য ও পরিষেবা গ্রহণ করতে পারেন। এর মূল উপাদানগুলো হলো- G2C (Government to Citizen) – জনগণের কাছে সেবা পৌঁছানো (যেমন: জন্মনিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্স, শিক্ষা সনদ) , G2B (Government to Business) – ব্যবসার সঙ্গে কার্যকর সম্পর্ক স্থাপন (যেমন: ট্যাক্স পরিশোধ, ব্যবসায়িক অনুমোদন), G2G (Government to Government) – আন্তঃপ্রশাসনিক সমন্বয় ও তথ্য আদান-প্রদান, G2E (Government to Employee) – সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন (যেমন: পে-রোল ম্যানেজমেন্ট)

গণতান্ত্রিক প্রশাসনে ই-গভর্ন্যান্সের ভূমিকা – স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি-ই-গভর্ন্যান্সের মাধ্যমে তথ্যের উন্মুক্ততা নিশ্চিত হওয়ায় প্রশাসনে স্বচ্ছতা তৈরি হয়। উদাহরণস্বরূপ, সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকল্প ব্যয়, অগ্রগতি ও ফলাফল প্রকাশের ফলে দুর্নীতি কমে এবং জনগণ প্রশাসনের ওপর আস্থা রাখে। নাগরিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা-অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে জনগণ সরাসরি মতামত, অভিযোগ ও পরামর্শ দিতে পারে, যা নীতিনির্ধারণে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি গণতন্ত্রের একটি মূল উপাদান—‘people’s participation in governance’-কে বাস্তবে রূপ দেয়। সেবা প্রাপ্তির সহজতা ও গতিশীলতা- ই-গভর্ন্যান্সের ফলে জনগণকে আর অফিসে লাইন দিয়ে ঘুরতে হয় না। ভূমি সংক্রান্ত দলিল, পাসপোর্ট আবেদন, ট্রেড লাইসেন্স, জন্মনিবন্ধন—সবকিছুই অনলাইনে করা সম্ভব হচ্ছে, সময় ও খরচ দুই-ই বাঁচছে। দুর্নীতি হ্রাস- মানুষ-নির্ভর সিদ্ধান্তের বদলে স্বয়ংক্রিয় ও তথ্যনির্ভর কার্যপ্রণালী দুর্নীতির সুযোগ কমিয়ে দেয়। যেমন, ই-প্রকিউরমেন্ট বা ই-টেন্ডারিং পদ্ধতির মাধ্যমে নিরপেক্ষতা বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে। প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি- তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে প্রশাসনিক কার্যক্রম দ্রুত, সুশৃঙ্খল ও ভুল-কম হয়। কাগজপত্রে কাজের বদলে ডিজিটাল ডেটা সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণের সুবিধায় সিদ্ধান্ত গ্রহণেও গতি আসে।
বাংলাদেশে ই-গভর্ন্যান্সের বর্তমান বাস্তবতা – বাংলাদেশ সরকার “ডিজিটাল বাংলাদেশ” ধারণা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সাল থেকে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। গুরুত্বপূর্ণ কিছু উদাহরণ হলো:একটি বাড়ি, একটি খামার প্রকল্প,উপজেলা ডিজিটাল সেন্টার (UDC) – গ্রামীণ জনগণের কাছে ই-সেবা পৌঁছে দেওয়া, NID, BRN, অনলাইন পাসপোর্ট আবেদন, সার্বজনীন জন্মনিবন্ধন ব্যবস্থা, ই-পেমেন্ট গেটওয়ে ও মোবাইল ব্যাংকিং সেবার প্রসার এসব উদ্যোগ জনগণের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তবে এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
চ্যালেঞ্জসমূহ- ডিজিটাল বিভাজন (Digital Divide)-শহর ও গ্রামের মধ্যে ইন্টারনেট ও প্রযুক্তি ব্যবহারের ব্যবধান এখনও অনেক বেশি। গ্রামাঞ্চলে ই-গভর্ন্যান্সের সুফল সর্বস্তরে পৌঁছায় না। সক্ষমতা ও দক্ষতার ঘাটতি- সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অনেকেই প্রয়োজনীয় আইটি দক্ষতা না থাকায় অনেক সময় প্রযুক্তিনির্ভর কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি হয়। সাইবার নিরাপত্তার ঝুঁকি- ব্যক্তিগত তথ্য ও সরকারি ডেটাবেইস নিরাপদ না থাকলে সাইবার হামলা বা তথ্যচুরি হতে পারে, যা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয়হীনতা- বিভিন্ন সরকারি দপ্তরগুলোর মধ্যে তথ্য আদান-প্রদানে সমন্বয়ের অভাব ই-গভর্ন্যান্স ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত করে।
ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা ও করণীয় বাংলাদেশসহ অন্যান্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ই-গভর্ন্যান্সের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে জনগণের আস্থা বৃদ্ধি, দুর্নীতি দমন, এবং প্রশাসনের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সম্ভব। ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য কিছু সুপারিশ: আইটি অবকাঠামোর উন্নয়ন (বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলে),প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি চালু করা, সাইবার নিরাপত্তা আইন ও কার্যকর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা, বহুমাত্রিক অনলাইন অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি (যেমন, নীতি প্রণয়ন সংক্রান্ত অনলাইন ভোটিং), একীভূত তথ্যভান্ডার ও আন্তঃদপ্তর সমন্বয় নিশ্চিত করা।
ই-গভর্ন্যান্স গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিচালনার একটি অপরিহার্য উপাদানে পরিণত হয়েছে। এটি জনগণের সঙ্গে রাষ্ট্রের সংযোগকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করে তোলে। যদিও চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তবে সঠিক পরিকল্পনা ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে ই-গভর্ন্যান্স শুধু একটি প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন নয়, বরং গণতান্ত্রিক উন্নয়নের চালিকাশক্তি হয়ে উঠতে পারে। বাংলাদেশও এই সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে।

লেখক-

প্রভাষক- প্রিন্সিপাল কাজী ফারুকী স্কুল এন্ড কলেজ

রায়পুর, লক্ষ্মীপুর।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট