মোঃ আবিদ হাসান-পাবনা জেলা প্রতিনিধি।
প্রিয় সহকর্মীবৃন্দ,
আধিপত্যবাদের দোসর আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ১৭ বছরের নিরবিচ্ছিন্ন লড়াইয়ে বিএনপির অগনিত নেতাকর্মীর স্বপ্ন, অনেক সম্ভাবনা, অনেক জীবন এবং অনেক কিছুই হারাতে হয়েছে। দলের বেশীরভাগ নেতা-কর্মীর ঘর সংসার দেখার মতো সুযোগ ছিলোনা । জুলুমের কালে ব্যবসা ছিলোনা, চাকরি ছিলো না, এমনকি অসংখ্য নেতা-কর্মীর তিন বেলা খাবার সংস্থান পর্যন্ত ছিলো না।
ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইয়ে অসংখ্য নেতাকর্মী এক ধরনের যাযাবর জীবন যাপন করেছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের দল ও দেশের প্রতি আবেগ ও ভালোবাসা এবং দেশপ্রেম আর আত্মত্যাগের স্পিরিট’ই এখন নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রেরণা।
আমাদের সমস্যা অনেক, পাশাপাশি আছে সম্ভাবনাও। দীর্ঘ ১৭ বছরের দুঃশাসনের কারণে দলের মধ্যে গ্রুপিং ও বিশৃঙ্খ পরিস্থিতিকে মোকাবেলা করে কাজ করতে হচ্ছে। এই বিপদজনক পরিস্থিতির মধ্যেও তৃণমূল নেতা কর্মীরা কঠোর পরিশ্রম করে সংগঠনকে শুধু টিকিয়েই রাখেননি দলকে এগিয়েও নিয়ে যাচ্ছে। দুঃখের বিষয় দলের সাংগঠনিক বিস্তৃতি ঘটেছে কিন্তু তৃণমূল নেতাকর্মীরা এখনও জীবনের ঝুঁকি মধ্যে রয়েছে এমনকি সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা দমন করা সম্ভব হয়নি। এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে হাতে গোনা কিছু বর্ণচোরা আখের গোছানোর কাজে লিপ্ত হয়েছে। দলের হাই কমান্ডের কঠোর নির্দেশও কেউ কেউ অগ্রাহ্য করছে। দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের কঠোর হাতে দমন করা হবে।
সময় এখনও বৈরী, কারো জন্য অপেক্ষা না করে নিবেদিত প্রাণ নেতা-কর্মীকেই ভ্যান গার্ডের ভূমিকা পালন করতে হবে।সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা দমন করে শৃঙ্খলা বজায় রাখার প্রতি গুরুত্বারোপ করতে হবে। সমাজের সর্বস্তরে নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয় ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কারণ সমূহ সমাজ বিশ্লেষক ও গবেষকদের জরিপে উঠে এসেছে। গবেষক ও বিশ্লেষকদের পর্যবেক্ষণে আরো ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে যে, কারণের পাশাপাশি এখন অকারণেও প্রতিষ্ঠান, সংগঠন, সমাজ এমনকি রাষ্ট্রের মধ্যেও বিশৃঙ্খলা ও বিভেদ সৃষ্টি করা হচ্ছে।
বিরাজমান সামাজিক ও রাজনৈতিক এই সংকটজনক পরিস্থিতিতে প্রতিটি তৃণমূল নেতাকর্মীকে বিপদ নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। বিভেদের মধ্যে অনেকটা তলাবিহীন ঝুড়িতে মালামাল রাখার মতো ঝুকি দেখা দিয়েছে। এই বিশৃঙ্খল অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে প্রতিটি তৃণমূল নেতা-কর্মীকে দল ও আদর্শের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার উপায় বের করতে হবে। বাস্তবতার নিরিখে যার যার অবস্থান থেকে প্রতিটি নেতা-কর্মীকে সঠিক পরিকল্পনা ও সমন্বয় করা প্রয়োজন।
বিরাজমান বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির কারণে তৃণমূল নেতৃত্বকে সবচেয়ে বেশী ঝুঁকি ও বিপদ মোকাবেলা করতে হচ্ছে। তৃনমূল নেতা-কর্মীদের এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি উত্তরণের উপায় খুঁজে বের করতেই হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ভবিষ্যত বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন ধারার রাজনীতি নিয়ে কাজ শুরু করছেন। যেখানে মানুষের কল্যাণই হচ্ছে মূখ্য বিষয়। তাই নেতাকর্মীদের যথেষ্ট দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। দীর্ঘ জুলুম, নিপীড়ন ও নির্যাতনের পর মুক্তির যে সূর্য উদিত হয়েছে খুব সহজে আমরা তাকে হারাতে দেবো না। বিএনপি বাংলাদেশের সর্ব বৃহৎ রাজনৈতিক দল। আমাদের দায়িত্বও অনেক বেশি।দলের তৃণমূল থেকে শীর্ষ সর্বস্তরের প্রতিটি নেতা-কর্মীকে সতর্ক থাকতে হবে কারো ভূমিকায় দলকে প্রশ্নের মুখে যেন ফেলে না দেয়।
বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মীর কাছে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা অনেক। সর্বস্তরের মানুষের প্রত্যাশা ও ভালোবাসার প্রতি সম্মান জানিয়ে দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণে ইতি বাচক মনোভাব নিয়ে কাজ করুন। সর্বস্তরে বিরাজমান সমস্যা সমাধানের জন্য জনগণের সহায় হয়ে উঠুন।সকল প্রকার অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। বিজয় আপনাকে বরণ করবেই ইনশাল্লাহ।