কবীর আহমেদ
জামালপুর প্রতিনিধি
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদে ভিজিডি চাল বিতরণে কার্ডধারীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের ঘটনায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের তিন নেতাকর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
একইসাথে শনিবার (২৪ মে) তদন্ত কমিটি গঠন করেছে উপজেলা প্রশাসন।
বহিষ্কৃত নেতাকর্মীরা হলেন—ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান রিপন, ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক-১ সুজন শেখ ও ইউনিয়ন যুবদলের সমবায় বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবু। এরমধ্যে রিপন ও সুজনকে শুক্রবার এবং বাবুকে শনিবার স্বাক্ষরিত বহিষ্কারপত্র প্রদান করা হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার বিকেলে ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মামুনুর রশীদ ফকির এক সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার সাথে দলীয় লোকজনের সম্পৃক্ততা ভিত্তিহীন দাবি করেন।
পরিষদ সূত্র জানায়, পোগলদিঘা ইউনিয়নে বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা নারীসহ হতদরিদ্রদের জন্য ৪৫৬টি ভিজিডি কার্ড বরাদ্দ দেয় সরকার। বুধবার (২১ মে) প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে ৫ মাসের মাথাপিছু ১৫০ কেজি করে চাল বিতরণ শুরু হয়। এসময় ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোবারক হোসেন, বিএনপি নেতা আক্তারুজ্জামান রিপন ও শ্রমিক দল নেতা সুজন শেখ কার্ডধারীদের কাছ থেকে ২০০-৩০০ টাকা করে আদায় করেন। জনৈক কার্ডধারী নিজের সমস্যার কথা জানালে যুবদল নেতা মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, “৬ হাজার টেহার চাল পাইতেছো, ২০০ টেহা দিতে পারবা না”? গোপনে ধারণকৃত এ সংক্রান্ত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম হয়।
এব্যাপারে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম বলেন, “দলীয় নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ সুনির্দিষ্টভাবে প্রমাণিত পাওয়ায় তিন নেতাকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।”
দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন বা অন্যায়-অপকর্মে জড়িত হলে কোনো নেতাকর্মীকে ছাড় দেওয়া হবে না বলেও তিনি জানান।
এদিকে টাকা আদায়ের ঘটনার সত্যতা যাচাই ও অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মোবারক হোসেনের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে প্রশাসন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনুপ সিংহকে আহ্বায়ক এবং মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শায়লা নাজনীন ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শওকত জামিলকে তদন্ত কমিটির সদস্য করা হয়।
ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (এসিল্যান্ড) লিজা রিছিল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।