মোঃ শাহেদ উদ্দিন হাতিয়া উপজেলা প্রতিনিধি
অমাবস্যা ও নিম্নচাপের প্রভাবে সৃষ্ট দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে অস্বাভাবিক জোয়ারে নিঝুম দ্বীপ সহ হাতিয়া দ্বীপের নিম্নঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে ১১ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় জোয়ারে তীব্রতায় বেড়িবাঁধের বাহিরের মানুষের বাড়ি ঘর দোকান পাটের মালামাল ভেসে যায়। ৩নং সতর্ক সংকেত বলবৎ থাকায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সামরিক ভাবে হাতিয়া সাথে সকল ধরনের, নৌ- যাতায়াত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল থেকে নিম্নচাপের প্রভাবে হাতিয়ায় ধমকা ও ঝড়ো হাওয়া সহ ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়। নদী ও সমুদ্র উত্তাল রয়েছে। দুপুরের জোয়ারের পানির উচ্চতা বেড়ে নলচিরা খাট এলাকায় বেড়ীর বাহিরে, নিঝুম দ্বীপ,চরঘাসিয়া ও ঢালচর সহ নিম্মাঞ্চল জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নলচিরা খাটের বেড়ীর বাহিরে অবস্থিত রাস্তার দুইপাশে ছোট ছোট দোকান গুলো পানিতে ডুবে যায়। জোয়ারের তীব্র স্রোতে ১০ টি দোকান ভেসে যায়। নলচিরা ইউনিয়নের বাসিন্দা হকসাব উদ্দিন জানান, জোয়ারের স্রোতে ও ঢেউয়ের আঘাতে শরীফ টি স্টোর, খালেকের চা দোকান সহ ঘাটের ৫-৬ টি দোকান ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুপুর ১১ টার পর আসা জোয়ারে এসব ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘাট এলাকার প্রধান সড়কের উপর তিনফুট উচ্চতায় পানি উঠে। জোয়ারের সাথে সাথে ঢেউয়ের তীব্রতা বেশি থাকায় ঘাটের এসব দোকানপাট বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়াও অতিরিক্ত জোয়ারে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের নিম্নঞ্চল গুলো প্লাবিত হয়েছে। রাতের জোয়ারে আরো বেশি প্লাবিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার মোঃ শাহেদ উদ্দিন জানান, দ্বীপের ১,২,৩, ও ৭,৮,৯, ওয়ার্ড সহ অধিকাংশ এলাকা অস্বাভাবিক জোয়ারে তলিয়ে যাই। মানুষের জীবন যাত্রা স্থবির হয়ে পড়ে। অনেকের ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় রান্না বান্না বন্ধ রয়েছে। নামার বাজার এলাকার ব্যবসায়ী তাজুল ইসলাম বলেন, নামার বাজার সহ আসপাশের সকল রিসোর্ট তলিয়ে গেছে। রাতে আরেকবার জোয়ার হবে। জোয়ারে সব তলিয়ে যাচ্ছে দেখে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। নিঝুমদ্বীপের বাসিন্দা আকবর বলেন, বেড়িবাঁধ না থাকায় সহজেই জোয়ারের পানি ঢুকে প্লাবিত হয় নিঝুম দ্বীপ। দিনে ও রাতে দুবেলায় জোয়ারে ইতিমধ্যে মোল্লা গ্ৰাম, বান্ধাখালী গ্ৰাম, পুর্ব মুন্সী গ্ৰাম, গুচ্ছ গ্ৰাম, পূর্বাঞ্চল গ্ৰাম, মদিনা গ্ৰামসহ নিঝুম দ্বীপের সব গুলো গ্ৰামে পানি ঢুকেছে। এদিকে সকাল থেকে উপজেলার হরণী, চানন্দী,সুখচর, নলচিরা, চরশ্বর,তমরুদ্দী, সোনাদিয়া, ইউনিয়নের কয়েক টি ওয়ার্ডের নিম্নঞ্চলসহ চারপাশের নদ নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ফুট হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হওয়া বয়ে যেতে পারে। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং জনগণকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ওদিকে হাতিয়া সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আলাউদ্দিন বলেন হাতিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। এ বিষয়ে ত্রাণ মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসকের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। প্রাণ পেলেই দুর্গতদের মাঝে দ্রুত পৌঁছে দেওয়া হবে।