শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি:
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার টেংরা পশ্চিমপাড়া (মিশনবাড়ি) এলাকায় বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে পুলিশের একটি অভিযান সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম উদ্বেগ ও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মিশনবাড়ীর ছাত্রলীগ নেতা রনিকে খুঁজতে অভিযান চালায় পুলিশ। কিন্তু ছাত্রলীগ নেতা সন্দেহে জনি নামের এক কলেজ ছাত্রকে আটক করে পুলিশ। যাচাই-বাছাইয়ের নামে অভিযানে থাকা পুলিশ সদস্যরা সোহাগ নামের এক পোশাক শ্রমিককে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদের নামে অপমানজনক আচরণ শুরু করেন। কথাবার্তার একপর্যায়ে অভিযানে অংশ নেওয়া শ্রীপুর থানার এএসআই মোঃ মুকুল মোল্লা সরাসরি সোহাগের গালে একাধিকবার চড়-থাপ্পড় মারেন—যা সম্পূর্ণরূপে অপ্রয়োজনীয়, অমানবিক এবং আইনবহির্ভূত।
অভিযানে শ্রীপুর থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল বারিক, (তদন্ত) শামীম আকতার ও (অপারেশন) নয়ন কুমার কর সহ একাধিক পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। অথচ তাদের কেউই এই অপেশাদার আচরণ রোধ করেননি, যা আরও হতাশাজনক।
ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পৌঁছান ভুক্তভোগী সোহাগের বড় ভাই ও সংবাদকর্মী এস এম জহিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, “পুলিশের এমন আচরণ শুধু অমানবিকই নয়, সরাসরি মানবাধিকার লঙ্ঘন। সোহাগ কোনোভাবেই অভিযুক্ত ছিলেন না। অথচ তাকে যেভাবে রাতের ঘুম থেকে তুলে এনে চড়-থাপ্পড় মারা হয়েছে, তা রাষ্ট্রের পোশাকধারী সদস্যদের কাছ থেকে একেবারেই অনভিপ্রেত। আমি এএসআই মুকুলের কাছে সরাসরি জানতে চেয়েছি কেন তিনি এমন আচরণ করলেন। আমাদের কথোপকথনের ভিডিও প্রমাণ হিসেবে সংরক্ষণ করেছি।”
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মহাম্মদ আব্দুল বারিক সাংবাদিককে জানান, যাচাই-বাছাই শেষে আটক জনিকে পুলিশ গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, ঘটনাটি জানানো হলে গাজীপুরের পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মোঃ যাবের সাদেক এ বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
জনগণের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব যাদের ওপর, সেই পুলিশ বাহিনীর কিছু সদস্যের এমন অপেশাদার ও দম্ভজড়িত আচরণ পুরো বাহিনীর প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা দুর্বল করে। প্রশাসনের উচিত, দোষী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে একটি স্পষ্ট বার্তা দেওয়া—আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়।