বরিশাল বুরো,
২৮ জুলাই:বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের এক যুবকের নাম ঘিরে সম্প্রতি তীব্র বিতর্ক এবং উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। নাম—হাফিজুল ইসলাম।
যে যুবককে কিছুদিন আগেও ছাত্রলীগের মিছিলে দেখা গেছে, তার হাতেই আজ বিএনপির সেচ্ছাসেবক দলের পতাকা! রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন উঠেছে—এই রূপান্তর কি আদর্শগত, নাকি সুবিধাবাদী?
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বাকেরগঞ্জ থানার বঙ্গশ্রী ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড বি এন পির সভাপতি জসিম ডাকুয়া'র-প্রত্যক্ষ সহায়তায় হাফিজুল সেচ্ছাসেবক দলে অন্তর্ভুক্ত হন। অথচ হাফিজুলের বিরুদ্ধে রয়েছে একের পর এক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ—যার বেশিরভাগই স্থানীয়ভাবে আলোচিত ও প্রমাণিত।
৫ই আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের খবরে উত্তাল পরিস্থিতির মাঝেই হাফিজুল ইসলাম এক হিন্দু ব্যবসায়ীকে মারধর করে তার নিকট থেকে মোটা অঙ্কের টাকা ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষোভে ফেটে পড়লেও, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় সে আজও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। এ ঘটনায় তার সাথে সংযুক্ত ছিল ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি তুহিন। ৫ ই আগস্ট এর পরে তুহিনের সাথে এই ছেলের ওঠাবসা থাকলেও তাকে এখন দেখা যায় ওয়ার্ড বি এন পির সভাপতি জসিম ডাকুয়া ও জুয়েল ডাকুয়ার সাথে। তবে কি পিছন থেকে ছায়ার মত হাফিজুল কে রক্ষা করেন এই ওয়ার্ড বি এন পির সভাপতি??
চাঁদাবাজি, পশু চুরি ও বাজার নিয়ন্ত্রণে জড়িত?
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত দুদিন আগে বোয়ালিয়া বাজারের একটি দোকানে পচা মুরগি বিক্রির সময় দোকানদারকে হাতেনাতে ধরা ফ্যালে ক্রেতা, কিন্তু হাফিজুল,জসিম ডাকুয়া সহ কিছু চাঁদাবাজ দের আর্থিক সুবিধা দিয়ে আড়ালে চলে যান এই পচা মুরগী বিক্রেতা।
একইভাবে, গত জুন মাসে প্রকাশ্যে একটি গরু চুরির ঘটনায় অপরাধীকে থানা থেকে ‘সমঝোতা’র মাধ্যমে ছাড়িয়ে আনা হয়—যার পেছনে জসিম ডাকুয়া ও হাফিজুলের ভূমিকা ছিল বলেই অভিযোগ রয়েছে।
রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় অপকর্ম?
এই সব ঘটনার মূল প্রশ্ন এখন—কে বা কারা এই হাফিজুলকে রক্ষা করে?
স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জসিম ডাকুয়ার ছত্রছায়ায় হাফিজুল ইসলাম নিয়মিতভাবে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে আসছে। জমি দখল, মাদক সংযোগ, দোকানদারদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়—সব কিছুর সাথেই জড়িত তার নাম।
এছারা থানা সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সুমন এর আশেপাশে প্রায়ই দেখা যাচ্ছে এই ২২ বছর বয়সী কিশোর হাফিজুল কে।
তাছারা সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হোসেন খানের সাথেও বিভিন্ন ছবিতে তাকে দেখা গিয়েছে।
এখন প্রশ্ন হলো থানা সেচ্ছাসেবক দল কেন এসব ঘটনায় চুপ???
বিএনপির নীরবতা কি প্রশ্রয় নয়?
একটি রাজনৈতিক দলে যদি এমন মুখোশধারী সুবিধাবাদীর প্রবেশ ঘটে, তবে তা দলীয় আদর্শ ও ভাবমূর্তির জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক।
প্রশ্ন উঠেছে—বিএনপি কি আদর্শের ওপর রাজনীতি করছে, নাকি অপরাধীদের আড়াল দিচ্ছে?
আর হাফিজুলের মতো লোককে জায়গা দিয়ে কি সেচ্ছাসেবক দলের বিশ্বাসযোগ্যতাও প্রশ্নের মুখে পড়ছে না?
বিএনপি যদি সত্যিই জনগণের দল হয়ে থাকে, তবে প্রশ্ন থেকে যায়—এই ধরনের চিহ্নিত অপরাধী, ভণ্ড রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের লোক কিভাবে তাদের সংগঠনে স্থান পায়?