মোঃ হাসান আলী, বাঘাইছড়ি (রাঙ্গামাটি) প্রতিনিধি
রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার রূপকারী ইউনিয়নে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর উদ্যোগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে পালিত হয়েছে। আজ (১ সেপ্টেম্বর) সোমবার সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে স্থানীয় নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। সমবেত বক্তারা বলেন, বিএনপি গণমানুষের দল—এ দল স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার রক্ষায় অতীতের মতো ভবিষ্যতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন রাঙ্গামাটি জেলা বিএনপির সহ-কৃষি বিষয়ক সম্পাদক জনাব মোঃ সেলিম উদ্দিন বাহারী। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক বাবু অলক বিকাশ চাকমা।
সভায় বক্তব্য রাখেন—মোঃ নাঈম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক, কাচালং সরকারি কলেজ ছাত্রদল; বিপাসু চাকমা, উপজেলা কৃষক দলের দপ্তর সম্পাদক; মিহির চাকমা, কৃষক দলের সদস্য; আলো বিকাশ চাকমা, রূপকারী ইউনিয়ন বিএনপি নেতা এবং খুকু মনি চাকমা, সাজেক ইউনিয়ন কৃষক দলের সহ-সভাপতি।
এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন—মৎস্যজীবী দলের সভাপতি আব্দুল মান্নান, তাঁতীদলের পৌর সভাপতি খিজির আহাম্মদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার বিন নাছির (রিয়াজ), উপজেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক আব্দুল সামাদ, সদস্য সচিব নাছির উদ্দিন, পৌর শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইয়াছিন, সাংগঠনিক সম্পাদক নবির হোসেন, ফুলেস কারবারি (মাচালং বাজার কমিটির সদস্য) ও রজত বিকাশ চাকমা।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, বিএনপি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। তিনি আরো বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শ এবং বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি সবসময় দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে সকল জাতিগোষ্ঠীর ঐক্য ও সমান অধিকারের লক্ষ্যে তারা কাজ করে যাবে বলেও তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “আমরা সবাই বাংলাদেশি, আমাদের অধিকার সমান। সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু বলে কিছু নেই। আমরা সবাই সমান অধিকারের দাবিদার। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ প্রমাণ করেছে—হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, ক্ষুদ্র জাতি, বৃহৎ জাতি সবাই একসাথে যুদ্ধ করেই এই দেশ স্বাধীন করেছে। সেই ঐক্যের চেতনা আবার ফিরিয়ে আনতে হবে।”
সভাপতি তার সমাপনী বক্তব্যে বলেন, “আজ আমরা আমাদের প্রিয় দলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করতে একত্রিত হয়েছি। এই দিনে আমরা শুধু অতীতের গৌরব স্মরণ করি না, বরং আগামী দিনের লক্ষ্য নিয়েও দৃঢ় প্রত্যয়ে এগিয়ে যাই। আমাদের দল গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছে।”
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সময়ে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোর জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়া অত্যন্ত জরুরি। তাই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষা, জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দেশের প্রতিটি নাগরিককে সমান অধিকার দেওয়ার সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানের সফলতার জন্য তিনি সকলে প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, অতিথি, নেতা-কর্মী এবং সহযোগী সংগঠনের সম্মিলিত অংশগ্রহণেই এ আয়োজন সম্ভব হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী দিনগুলোতেও সবাই একত্রিত থেকে দেশের কল্যাণে কাজ করে যাবে। শেষে সকলের সুস্থতা, শান্তি ও অগ্রগতির জন্য শুভকামনা জানিয়ে তিনি অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
অনুষ্ঠানে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতি ছিল, এবং আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে দলের প্রতি নতুনভাবে অঙ্গীকারের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন সকলে।