মোঃ হাসান আলী, বাঘাইছড়ি প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল–বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে উপজেলা ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় কাচালং ব্রিজ সংলগ্ন ময়দান থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে গিয়ে আলোচনা সভায় মিলিত হয়। র্যালীতে উপজেলা ও পৌর বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা হাতে ব্যানার, ফেস্টুন ও দলীয় পতাকা নিয়ে র্যালীতে অংশ নেন। স্লোগান ও করতালিতে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ ওমর আলী। সঞ্চালনা করেন পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রহমত উল্লাহ খাঁজা।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গামাটি জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার দীপু এবং প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ মামুন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সুশোভন দেওয়ান আগা, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও বাঘাইছড়ি পৌর বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব নিজাম উদ্দিন বাবু, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শাকিল, রাঙ্গামাটি পৌর বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক এস.এম. শফিউল আজম, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক দেব জ্যোতি চাকমা, জেলা বিএনপির সহ তথ্য বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাবেদুল আলম, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বদিউল আলম ও পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ নুরুল আলমসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বিএনপি দেশের গণতন্ত্র রক্ষা ও জনগণের ভোটাধিকার আদায়ের সংগ্রামে লিপ্ত রয়েছে। পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রকে পদদলিত করেছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাঙ্গামাটির ২৯৯ আসনে মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তারা।
বক্তারা আরো বলেন, “দেশি–বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র বিএনপিকে মোকাবেলা করতে হচ্ছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে বানচাল করতে গুপ্ত সংগঠন ও নব্য সংগঠন নানা ভাবে ষড়যন্ত্র করছে। বর্তমানে বিএনপিকে এক অদৃশ্য ছায়ার সাথে সংগ্রাম করতে হচ্ছে। তবে ঐক্যবদ্ধ বিএনপি যেকোনো ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে সক্ষম। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দিয়েছেন, জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়েছেন। বিএনপির প্রতিটি কর্মীকে সেই আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।” তারা আরও বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিএনপি সবসময় জনগণের পাশে থেকেছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত “রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা” কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে। ৩১ দফা কেবল রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি নয়, এটি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, বৈষম্যহীন ও মানবিক সমাজ গঠনের সনদ। ৩১ দফা কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হলো দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কার এবং জনগণের আস্থা অর্জন করা। দলের নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশনা দিয়েছেন যে, ৩১ দফা কর্মসূচি শুধু দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। তারা আরো বলেন, “৩১ দফায় দলীয় যে নির্দেশনা রয়েছে তা উপজেলা, ইউনিয়ন থেকে গ্রাম পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে হবে। এছাড়া, বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “মানুষ যদি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে না থাকে সেই দলের কোনো সার্থকতা নেই। কোনো দল জনবিচ্ছিন্ন হলে তার পরিণতি ভালো হবে না। সেইজন্য সকলকে আরো সচেতন হতে হবে।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, “জামায়াতসহ কিছু ভুঁইফোড় সংগঠন আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বানচাল করতে নতুন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়।
সভা শেষে উপজেলা মিনি স্টেডিয়ামে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।