মো: জিহাদ হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি চাঁদপুর।
চাঁদপুরে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপন উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২১মে সকাল ১০টায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোঃ মোহসীন উদ্দিন। সঞ্চালনায় ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ এরশাদ উদ্দিন।
জেলা প্রশাসক মোঃ মোহসীন উদ্দিন বলেন, যেসব হাটের ইজারাদার নিজ দায়িত্বে জালনোট শনাক্তকারী মেশিন বসাবে না, সেখানে হাট বসানো হবে না। হাট ব্যবস্থাপনায় যেন শৃঙ্খলা থাকে এবং কেউ প্রতারণার শিকার না হয়, সে জন্য যারা হাসিল আদায়ে দায়িত্বে থাকবেন, তারা নির্ধারিত পোশাক পরবেন।
তিনি আরও বলেন, চাঁদপুরে কোরবানির চামড়া সংরক্ষণের জন্য ৪১৯ মেট্রিক টন লবণের ব্যবস্থা রয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে ঢাকায় কোনো গরুর চামড়া পাঠানো যাবে না। কেউ নিয়ম ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গরু মোটাতাজাকরণে নিষিদ্ধ উপাদান ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং এ বিষয়ে তথ্য অফিসকে মাইকিং করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চাঁদপুরে যদি গরুর সংকট দেখা দেয়, তাহলে ঢাকা থেকে গরু এনে সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।
কোরবানির চামড়ার দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার নির্ধারিত রেট অনুযায়ী চামড়া সংগ্রহ নিশ্চিত করতে হবে যাতে প্রকৃত মালিকরা ন্যায্য মূল্য পান।
ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে জেলা প্রশাসক জানান, রাস্তায় যেন যানজট না হয়, ছিনতাই ও হয়রানির ঘটনা না ঘটে সে জন্য পুলিশ প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকতে হবে। লঞ্চঘাটে পর্যাপ্ত টহলের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নৌপথে দুর্ঘটনা রোধে নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ডকে কড়া নজরদারিতে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বাস, সিএনজি ও অন্যান্য যানবাহন যেন ট্রাফিক আইন মেনে চলে এবং কেউ যেন অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করে, সেদিকে নজরদারি করতে হবে। গত ঈদে লঞ্চঘাট থেকে কিছু সিএনজি ড্রাইভার অতিরিক্ত ভাড়া নিয়েছিল; এবার এমন ঘটনা যেন না ঘটে, সে জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাস, লঞ্চ ও সিএনজির ভাড়া যাতে কোনোভাবেই বাড়ানো না হয় সে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে ঈদের সময় কোনো এলাকায় লোডশেডিং না হয়। ফায়ার সার্ভিসকে সব সময় প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে যাতে যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি দ্রুত মোকাবিলা করা যায়।
পৌরসভাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কোরবানির দিন সন্ধ্যার মধ্যেই সব বর্জ্য অপসারণ নিশ্চিত করতে হবে। মসলাজাতীয় দ্রব্য, বিশেষ করে গরম মসলা যেন কেউ কৃত্রিমভাবে দাম বাড়াতে না পারে, সেজন্য বাজার মনিটরিং জোরদার করতে হবে।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন: সৈয়দ মুশফিকুর রহমান, নৌ পুলিশ সুপার, চাঁদপুর মোঃ আব্দুল হান্নান রনি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (চাঁদপুর সার্কেল) আহসান, স্টেশন কমান্ডার, কোর্ট গার্ড, চাঁদপুর এমডি আবু আব্দুল্লাহ, জয়েন্ট ডিরেক্টর, এনএসআই মোঃ মুনীর হোসেন, জেলা কারাগার, চাঁদপুর মোঃ আবুল কালাম ভূঁইয়া, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, চাঁদপুর পৌরসভা ওয়াসিউদ্দিন আহমেদ, উপবিভাগীয় প্রকৌশলী, সড়ক ও জনপদ বিভাগ মোঃ কামরুজ্জামান, সহকারী পরিচালক, বিআরটিএ মোঃ ফয়সাল আলম চৌধুরী, সহকারী মহাব্যবস্থাপক, বিআইডব্লিউটিসি মোহাম্মদ মারুফ হোসেন, স্টেশন মাস্টার, বাংলাদেশ রেলওয়ে, চাঁদপুর মোঃ ছানোয়ার হোসেন, সিনিয়র স্টেশন অফিসার, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, চাঁদপুর। এছাড়াও সভায় জেলা ও বিভিন্ন দপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় অংশগ্রহণকারী সবাই তাদের যথাযথ ভূমিকা পালন করে ঈদ উদযাপন সফল ও শান্তিপূর্ণ করতে দৃঢ় প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।