মধ্যনগর(সুনামগঞ্জ)প্রতিনিধি :
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার রামদিঘা গ্রামের সামনে মনাই নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নদীতীরবর্তী রামদীঘা গ্রামের কয়েকটি পরিবার বসতভিটা হারানোর ঝুঁকিতে পড়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ প্রশাসনের নিষেধ থাকার পরও বালু উত্তোলন বন্ধ হয়নি সেখানে। এতে নদী ভাঙনের ভয়াবহতা দিন দিন প্রকট আকার ধারন করছে।
গত বুধবার (২৩ জুলাই) দুপুরে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা মনাই নদীতে চলমান অবৈধ বালু উত্তোলনের সময় শাহিন মিয়া (২৮) নামের এক যুবককে নৌকা ও ড্রেজার মেশিনসহ আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন। এ সময় তার সঙ্গে থাকা অন্যান্যরা পালিয়ে যায়। আটক শাহিন সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভপুর উপজেলার আলীপুর গ্রামের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুপুরে তাকে আদালতে সোপর্দ করেছে মধ্যনগর থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় মামলার বাদী স্থানীয় বাসিন্দা তারেক মিয়া জানান, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম মজনু ও ছাত্রদলের সদস্য সচিব মুসাব্বির তালুকদার সাগরের নেতৃত্বে একটি চক্র গত ১৫ দিন ধরে মনাই নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল। স্থানীয়দের সহযোগিতায় এক অভিযানে একজনকে হাতেনাতে আটক করে থানায় সোপর্দ করা হয়। এরপর তিনি বাদী হয়ে মধ্যনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এদিকে স্থানীয়ভাবে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, জিজ্ঞাসাবাদের সময় আটককৃত শাহিন জানায়, বিএনপি নেতা কাইয়ুম মজনুর নির্দেশেই তারা বালু উত্তোলন করে আসছিল এবং এর বিনিময়ে মজনুকে নিয়মিত মাসোহারা প্রদান করা হয়।
স্থানীয়দের দাবি, প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে নদী ভাঙনে বহু পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে।
এ বিষয়ে মধ্যনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান আহবায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম মজনুর সাথে বার বার যোগাযোগ করেও পাওয়া যায় নি।
মধ্যনগর থানার তদন্ত কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। এছাড়াও অজ্ঞাত আরও দুজনকে আসামি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় বিএনপি নেতার সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে চাইলে, ওই কর্মকর্তা বলেন, এজাহারে তাদেরও নাম রয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য অভিযুক্ত বিএনপি নেতা আব্দুল কাইয়ুম মজনুর বিরুদ্ধে মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি, জলমহাল দখল ও লুঠপাট, ভারতীয় গরু চোরাকারবারসহ বিভিন্ন অপকর্মে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তার এসব অপকর্মের বিষয়ে ইতিপূর্বে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে একাধিকবার সংবাদ প্রকাশিত হলে একটি জাতীয় পত্রিকার স্থানীয় সাংবাদিক মজনু ও তার সহযোগী কর্তৃক মারধোরের শিকার হন।