নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুরঃ
সাংবাদিকতার নামে প্রতারণা ও চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে আলী নাঈম, বেলায়েত হোসেন এবং রহিমা আক্তারসহ সাংবাদিক পরিচয় দানকারী একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে
অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে জানা যায়, আলী নাঈম ওরফে মো: নায়েব আলী (পিতা মো: নফুর উদ্দিন থানা মিঠাপুকুর,জেলা- রংপুর) নিজেকে হিউম্যান রাইটস লিগ্যাল এইড সেন্টার ফাউন্ডেশনের আইন উপদেষ্টা ও পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এর ঘনিষ্ঠজন পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে এতদিন চাঁদাবাজি করেছেন। আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পরে এই আওয়ামী লীগ দোসর মো: নায়েব আলী নিজের খোলস পরিবর্তন করে বনে গিয়েছেন সাংবাদিক এবং তার নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে সাংবাদিকতার নামে প্রতারক চক্র- এমন অভিযোগ করেন এই চক্রের মাধ্যমে প্রতারিত হওয়া একাধিক ভুক্তভোগীরা
একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা যায়, নায়েব আলী ওরফে আলী নাঈম এই চক্রের মূল হোতা। তিনি এবং এই চক্রের অন্যতম সদস্য বেলায়েত হোসেন ও নারী সদস্য রহিমা আক্তার মুক্তাসহ আরো কয়েকজন প্রথমে বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরীরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এনআইডি নাম্বার সংগ্রহ করে। এনআইডি নাম্বার থেকে ব্যক্তিগত টিআইএনের একনলেজমেন্ট তুলে নেয়। এরপর একের পর একজনকে টার্গেট করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ও প্রতিষ্ঠানে বে-নামে ভুয়া অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম্বার এনআইডি এবং টিন নাম্বার ব্যবহার করে সেই অভিযোগপত্রে যাদের নাম থাকে তাদের হোয়াটসঅ্যাপে অভিযোগপত্র ও নিবন্ধনহীন ভুয়া পত্রিকা ও অনলাইন পেপারের ছবি তুলে অথবা লিঙ্ক পাঠিয়ে তাদের ব্লাকমেইলের চেষ্টা করেন।
অবাস্তব ও ভিত্তিহীন অভিযোগপত্র ও নিউজ লিংকে উল্লেখিত বিষয়বস্তু নিয়ে ভুক্তভোগীরা সারা না দিলে ভুক্তভোগীকে প্রতারক চক্রের প্রধান আলি নাঈম ফোন করে তার নামে নিউজ হয়েছে বলে বিষয়টি মিটমাট করার কথা বলেন- বলে জানান কয়েকজন ভুক্তভোগী। অনেক সময় ভুক্তভোগীরা সামাজিক ভাবে হেও প্রতিপন্ন হওয়ার ভয়ে টাকা পয়সা দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান বলে জানান কয়েকজন।
আলী নাঈম ওরফে নায়েব আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে দেখা যায় সড়ক পরিবহণ আওতাধীন বিভিন্ন বিআরটি অফিসে ওবিআরটিএ ও সড়ক জনপদের পিয়ন থেকে শুরু করে পরিচালক পর্যন্ত অনেকেই এই চক্রের প্রতারণার শিকার। অনেকে তাকে পতিত আওয়ামী লীগের দোসর বলেও মন্তব্য করেন।
বিআরটিএর একাধিক কর্মকর্তার কাছে অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক কর্মকর্তাই বলেন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিজেকে ওবায়দুল কাদেরের ঘনিষ্ঠজন পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করতেন আর এখন আমাদের বিভিন্ন পর্যায়ের বিভিন্ন জেলায় বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে ভুয়া অভিযোগ বানিয়ে দুদকের চিঠির ভয় দেখিয়ে আমাদের সাথে রীতিমত প্রতারণা করে যাচ্ছে। আমরা এই প্রতারকের কাছে অর্থাৎ নাঈম চক্রের কাছে নিরুপায়।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাওয়ার জন্য আলী নাঈমের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। খোঁজ নিয়ে জানা যায় নায়েব আলী নাঈম প্রতারণা অভিযোগে ডিএমপির কোতোয়ালি থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। ২০১৭ সালে কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা মামলায়( এফ আই আর নং-২০/২০,তারিখ -১৭,জানুয়ারী ধারা ৪১৯/ ৪২০ পেনাল কোড ১৮৬০ ধারা) গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন কারা ভোগ করেছেন এই প্রতারক চক্র। জেল থেকে বেরিয়ে আবারো শুরু করেছেন অভিনব কায়দায় প্রতারণা।